অটোরিক্সা


 .......ফয়সাল আহমেদ



     বগুড়া শহরের কলোনীতে, কিছু পন্য ক্রয়ের জন্য এক মুদিখানার দোকানের সো-উইন্ডোতে (বহিঃজানালা) দাড়িয়ে ছিল ফয়সালএ সময় হঠাৎ তার মুঠোফোনের রিংটোন বেজে ওঠলফয়সাল মুঠোফোনটিকে তার পকেট থেকে বের করার লগ্নে, হাতের ডানদিক দিয়ে হেঁটে চলা এক চোঁখ ধাঁধানো কুমারীকে দেখে স্থবির হয়ে গেলভুলে গেল তার কলটি রিসিভ করা ও পণ্য ক্রয় এর কথাটাওসেই মেয়েটার নাম জ্যোতি; আর তার সঙ্গে মৌমিতা ও তানিয়া নামে দুইজন বান্ধবী ছিলতারা সকলেই এক সঙ্গে, একটি অটোরিক্সাতে (ব্যাটারী-চার্জে চালিত একটি ছোট আকৃতির গাড়ী) উঠলতৎসঙ্গে ফয়সালও উঠলগাড়িটা যাচ্ছিল উত্তরে সাতমাথার দিকেএ সময় তাদের মধ্যে কিছু কথোপকথনঃ
তানিয়াঃ আগে কোন্‌ মার্কেটে যাবি?
মৌমিতাঃ গেলেই হলো একটাতে
জ্যোঃ আগে নিউ মার্কেটে যাব

       একথা শুনতেই ফয়সাল ভাবছিল, কিভাবে কি বলা যায় আর কিভাবে কি করা যায়তাই পূর্ব থেকেই একটু কল্পনা করে দেখছিলঃ
ফঃ হ্যাঁ, ঠিকই তো আছে; আপনার মতই
জ্যোঃ ঠিকই তো আছে, আমার মতই; মানে কি?
ফঃ এই যে বললেন, আগে নিউ মার্কেটে যাবেনমার্কেটও নিউ, আপনিও নিউ......
জ্যোঃ জ্বি না; মার্কেটটি অনেক ওল্ড বাট তারপরেও ওটাকে যুগ যুগ ধরে নিউ বলেই ডাকতে হয়
ফঃ হ্যাঁ, ঠিকই তো আছে; আপনার মতই
জ্যোঃ আবার ঠিকই তো আছে, আমার মতই; মানে কি?
ফঃ এই যে বললেন, একটি ওল্ড মার্কেটকে যুগ যুগ ধরে নিউ বলেই ডাকতে হয়তেমনি আপনাকেও যুগ যুগ ধরে নিউ বলেই ডাকা দরকার
জ্যোঃ আপনি একজন প্যাসেঞ্জার; সো, প্যাসেঞ্জারের মত থাকেনআমার সম্পর্কে আপনাকে কিছু বলতে হবেনা
       ফয়সাল ভাবল, এমনভাবে কথা বললে, এমনভাবেই প্রত্যুত্তর দেবেতাই কল্পনাটাকে আর বাস্তবে রুপ দিতে চেষ্টা করল নাএর কিছু সময় পর জ্যোতির মুঠোফোনে কল আসলকলটি রিসিভ করে সে তার আম্মুর সাথে কথা বললঃ
জ্যোঃ হ্যাঁ, আম্মু বলো
জ্যোঃ তুমি তো সবসময় একটু বেশি বুঝএকা কই আমি? আমার সঙ্গে তানিয়া আছে; মৌমিতা আছে
জ্যোঃ হ্যাঁ, তারাতারিই আসব; রাখলাম
       জ্যোতির কথা বলা শেষ হলোতৎক্ষণাৎ ফয়সাল একটি ভালো উপায় খুঁজে পেল এবং ভাবলঃ
ফঃ এতক্ষন, সে কথা বলল আর আমি শুনলামএখন, আমি কথা বলব আর সে শুনবে
       এই ভেবে তার এক বন্ধু রাসেলের ফোনে কল দিয়ে তার সাথে কথা বলল যেটা ছিল প্রধানত জ্যোতিকে শোনানোর উদ্দেশ্যেঃ
ফঃ হাউ আর ইউ ফ্রেন্ড?
রাঃ ভাল বন্ধুতুই কেমন আছিস?
ফঃ আমি তো অনেক বেশী ভাল আবার অনেক বেশি খারাপ
রাঃ কেন কেন?
ফঃ কারনটা হল, একটা কিছু পেয়ে গেছি আবার একটা কিছু হারিয়ে ফেলেছি
রাঃ সেটা কিভাবে?
ফঃ আচ্ছা সেটা পরে বলবতুই মডেমটা বের করে নেট কানেকশন দিয়ে রাখ; আমি আসতেছি
রাঃ ইমারজেন্সি কোন কাজে?
ফঃ আজকে একটি ফেইসবুকের পেইজ খুলব যেটার নাম হবে অটোরিক্সা
রা অটোরিক্সা কেন?
ফঃ কারণ, আজকে অটোরিক্সাতে এমন একটা কিছু দেখছি যেটা আসলে মনে রাখবার মত
        এ সময় ফয়সালের ফোনে আরেকটি কল আসলতখন বললঃ
ফঃ আরেকটা কল আসছে; এখন রেখে দে
       এই বলে পরের কলটি রিসিভ করে তার রুমমেট ও বড় ভাই কিরনের এর সাথে কথা বললঃ
কিরনঃ কি ব্যাপার? আমি শ্যাম্পু আর হুইল এর জন্য বসে আছি
ফঃ হ্যাঁ ভাই; এই তো যাচ্ছি
       এই বলে লাইনটি কেটে দিয়ে অটোরিক্সার ড্রাইভারকে বললঃ
ফঃ এই মামা, ব্রেক করেন
       গাড়ীটি ব্রেক করলে, সেখান থেকে নেমে, বিপরীত মুখী আরেকটি গাড়ীতে উঠে আবার কলোনীতে নেমে গেলঅতপর, তারাতারি করে শ্যাম্পু ও হুইল কিনে তার মেসে পৌছে দিল এবং পুনরায় সাথমাথায় গিয়ে নিউ মার্কেটে প্রবেশ করলসেই মার্কেটে এবং আরো বেশ কয়েকটি মার্কেটে খোঁজাখুঁজি করল কিন্তু তাদের আর পেল নাঅবসন্ন হয়ে তাকে মেসে ফিরে যেতে হলো

       মেসে ফিরে গিয়ে, কম্পিউটারে ইন্টারনেট (সহজে ও অল্প সময়ে পৃথিবী ব্যাপি তথ্য আদান-প্রদান ও সংরক্ষনের একটি উপায় ও মাধ্যম) সংযোগ দিয়ে, ‘অটোরিক্সানামে একটি ফেইসবুকের (ইন্টারনেটে সমাজিক যোগাযোগের একটি বহুল ব্যবহৃত মাধ্যম) ফ্যান পেইজ (অধিকতর বেশী ফেইসবুক ব্যাবহারকারীর সাথে সহজেই তথ্য আদান-প্রদানের একটি উপায়) তৈরি করতেছিলএমন সময় তার বন্ধু রাসেল তাকে বললঃ
রাঃ আচ্ছা বন্ধু, তুই যে অটোরিক্সাতে উঠছিলি সেটার কথা মনে আছে?
ফঃ মানে?
রাঃ মানে অটোরিক্সাটাকে দেখলে চিনতে পারবি?
ফঃ হ্যাঁ, ব্লু কালার পুরোনো একটা অটোরিক্সা
ফঃ তাহলে একটা কাজ করিঐ অটোটারই একটা ফটো তুলে, এই পেইজের প্রোফাইল ফটো হিসেবে আপলোড দিয়ে দেই
ফঃ এক মিনিট
       এরপর ফয়সাল একটু ভেবে আবার বললঃ
ফঃ ওয়াও ফ্যান্টাসটিকঐ মেয়েটা সহযোগে আমি যে অবস্থাতে অটোরিক্সাতে ছিলাম, ঠিক সেটারই ফটো দেবো
রাঃ সেটা কিভাবে?
ফঃ আমার সাথে চল্‌; তাহলেই বুঝতে পারবি
       এরপর ফয়সাল রাসেলকে কলোনী থেকে সামাথা অবধি রাস্তার একপার্শ্বে একটি সেলফ্‌-সার্ভিস (স্বপরিবেশিত) বিক্রয় কেন্দ্রের সামনে নিয়ে গেলসেলফ্‌-সার্ভিস বিক্রয় কেন্দ্রে ক্রেতারা নিজের ইচ্ছেমত পণ্য-সামগ্রী সংগ্রহ করে; বিধায়, নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরা (যার দ্বারা যান্ত্রিকভাবে সহজেই দর্শন করা যায় এমন) সংযোজন করা থাকেদ্রুপ সেখানেও সিসি ক্যামেরা সংযোজন করা ছিলআবার নিরাপত্তার আধিক্যতার জন্য তৎসংগে বাহিরেও একটি সিসি ক্যামেরা লাগানো ছিলসেখানে ফয়সাল রাসেলকে বললঃ
ফঃ আমি এখন ভিতরে যাব, তার কিছুক্ষন পর তোর ফোনে মিসড্‌ দেবোঠিক তখনই ক্যামেরার লেন্সের সামনে কিছু দিয়ে ব্লক করে রাখবি এরপর ২য় বার মিসড্‌ দিলে, লেন্স আবার ক্লিয়ার করে দিবিওকে?
রাঃ ঠিক হে
       ফয়সাল দোকানের ভিতরে প্রবেশ করে দেখল, ক্যামেরা ভিউয়ার (পরিদর্শক) হিসেবে একজন ১৫-১৬ বৎসর বয়সী একটি ছেলে কম্পিউটারের সামনে বসে আছেছেলেটি যখন একজন ক্রেতাকে, তাকের উচু স্তরে রাখা একটি পণ্য উপর থেকে নেমে নিতে সাহায্য করার জন্য পার্শ্বে আসল, ঠিক তখন ফয়সাল রাসেলের মুঠোফোনে মিসড্‌ কল দিল; আর তৎক্ষনাৎ রাসেল তার মুখ থেকে চুইংগাম বের করে লেন্সের সামনে লাগিয়ে, লেন্সের প্রতিবন্ধক সৃষ্টি করে রাখলকিছুক্ষণ পর ক্যামেরা ভিউয়ার কম্পিউটারের সামনে গিয়ে দেখল, একটা ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ (চলমান চিত্র) দেখা যাচ্ছে নাতাই সে তখন পার্শ্বস্থ ক্যাশ কাউন্টার ম্যানকে বললঃ
ক্যা:ভিঃ আঙ্কেল, একটা ক্যামেরার ফুটেজ দেখা যাচ্ছে না
ক্যা:কা:ম্যাঃ কোন্‌ ক্যামেরাটা?
ক্যা:ভিঃ বাহিরের
ক্যা:কা:ম্যাঃ বাহিরে গিয়ে দেখে আসো তো
       ছেলেটি তথা ক্যামেরা ভিউয়ার বাহিরে যাবার মূহুর্তে ফয়সাল রাসেলের মুঠোফোনে ২য় বার মিসড্‌ কল দিলতৎসঙ্গে রাসেলও ক্যামেরার লেন্স থেকে চুইংগামটি তুলে নিলএতে ক্যামেরা ভিউয়ার বাহির থেকে ক্যামেরা ঠিকঠাক অবস্থায় দেখে, আবার ভিতরে প্রবেশ করলফয়সাল আবার রাসেলকে ৩য় বার মিসড্‌ কল দিলতা দেখে রাসেল ভাবলঃ
রাঃ ১ম মিসে ব্লক, ২য় মিসে ক্লিয়ারকিন্তু ৩য় মিসে কি, সেটা তো বলেনি
       এই ভাবতেই তার মুঠোফোনে ফয়সালের এস.এম.এস. (সংক্ষেপ বার্তা) আসলঃ
ফঃ ক্যামেরা ব্লক
       এটা দেখে সঙ্গে সঙ্গে আবার চুইংগামটি লেন্সের উপরে লেগে দিলআর এদিকে ক্যামেরা পরিদর্শনের ছেলেটি ক্যাশ কাউন্টার ম্যানকে বললঃ
ক্যা:ভিঃ বাহিরে তো ঠিকই আছে
ক্যা:কা:ম্যাঃ ড্রয়ারে একটা ইজ্ঞিনিয়ারের কার্ড আছেকল দিয়ে আসতে বলো
       এ সময় ফয়সাল ক্যাশ কাউন্টার ম্যানকে বললঃ
ফঃ আঙ্কেল, এটা আমিও রিপেয়ার করতে পারব
ক্যা:কা:ম্যাঃ কি করেন আপনি?
ফঃ কম্পিউটারে ডিপ্লোমা করতেছি
ক্যা:কা:ম্যাঃ আচ্ছা দেখেন
       এরপর ফয়সাল সেই কম্পিউটারে সামনে বসে বললঃ
ফঃ ক্যামেরার সাথে সফট্‌ওয়্যার এর ডিস্ক থাকেসেটা কোথায়?
ক্যা:ভিঃ দাড়ান, আমি এনে দিচ্ছি
       একথা বলে ছেলেটি আরেক কাউন্টারে যাচ্ছিল, ক্যামেরা ড্রাইভার এর ডিস্ক আনার জন্যতখন ফয়সাল তার একটি পেন ড্রাইভ (তথ্য সংরক্ষনের যন্ত্র) কম্পিউটারের সংগে সংযুক্ত করলএরপর সেদিনের, সেই ক্যামেরার ভিডিও ফাইল গুলো কপি (হুবুহু/অনুরুপ) করে নেবার পর, পেন ড্রাইভটি খুলে নিলকিছুক্ষণ পর ছেলেটি ক্যামেরা ড্রাইভার এর ডিস্কটি এনে দিলফয়সাল সেটাকে ডি.ভি.ডি. ড্রাইভার এর মধ্যে প্রবেশ করালতারপর ক্যামেরার প্রোগ্রাম অক্ষুণ্য থাকা সত্ত্বেও রি-ইনস্টল (পুনরায় স্থাপন) করে রাসেলের মুঠোফোনে এস.এম.এস. পাঠিয়ে দিলঃ
ফঃ ক্যামেরা ক্লিয়ার
       এতে করে রাসেল শেষ বারের মত চুইংগাম তুলে নিলআর এদিকে ফয়সাল ক্যামেরার প্রোগ্রামটি চালু করে বললঃ
ফঃ ওকে হয়ে গেছে
       এই বলে সেখান থেকে উঠে চলে যাবার ভাব ভংগিমা দেখায়ে বললঃ
ফঃ ঠিক আছে আঙ্কেল; তাহলে আসি
ক্যা:কা:ম্যাঃ আপনি কি কিনতে আসছিলেন?
ফঃ ওহ, আমি সানগ্লাস নিতে আসছিলাম; ভুলেই গেছি
       একথা বলে ফয়সাল একটি সানগ্লাস নিয়ে এসে বিল-পে (টাকা পরিশোধ) করার জন্য, আবার সেই কাউন্টারে আসলকেবল টাকা দিতেই ক্যাশ কাউন্টার ম্যানটি বললেনঃ
ক্যা:কা:ম্যাঃ থাক্‌ দেয়া লাগবেনা
ফঃ আসলে আঙ্কেল, আমি তো এখনও জব করিনা
ক্যা:কা:ম্যাঃ স্যাটিস্‌ফাইড হয়ে দিলাম; নাও
ফঃ ওহ , থ্যাঙ্কস্‌তাহলে আসি
       এই বলে ফয়সাল বিক্রয় কেন্দ্রের বাহিরে বের হয়ে একটি দীর্ঘশ্বাস নিল এবং রাসেলকে সানগ্লাসটি দিয়ে বললঃ
ফঃ দিস ইজ ফর ইউ
রাঃ আমার জন্য কিনলি?
ফঃ তোর জন্যই নিলাম কিন্তু কিনিনি
রাঃ তার মানে কি চুরি করে?
ফঃ এই সালা, কবে কার কি চুরি করলাম?
রাঃ তো কিভাবে?
ফঃ আসার টাইমে জিঙ্গেস করলেন, আমি কি কিনতে আসছি
রাঃ ভিডিও কিনতে আসছি
ফঃ হঠাৎ করে বললাম, সানগ্লাসএরপর বিল-পে করতে গিয়ে ভদ্র লোকটি বললেন, রিপেয়ার করার জন্য স্যাটিস্‌ফাইড হয়ে টাকাটা মওকুফ দেওয়া হলোব্যা; আমিও চলে আসলাম
রাঃ এ তো দেখতেছি, কই এর তেলে কই ভাজা
ফঃ না হইলোনা
রাঃ তো কি?
ফঃ কই এর তেলে কই ভাজা বলতে তো ভিডিও ফুটেজটা পাইলামআর সানগ্লাসটা হল, অবশিষ্ট তেল
এভাবে গল্প করতে করতে তারা মেসে ফিরে গেলএরপর সেই ভিডিও ফুটেজ থেকে ফটো-ক্যাপচার (স্থির ছবিতে রূপান্তর) করে অটোরিক্সানামের ফ্যান পেইজটিতে প্রোফাইল-ফটো (সেই ক্ষেত্রে সহজেই পরিলক্ষিত হয়, এমন ছবি) হিসেবে আপলোড করল

       এর তিনদিন পরের ঘটনাফয়সাল বিছানায় হেলান দিয়ে একটি বই পড়তেছিলতার মুঠোফোনটি ছিল রাসেলের টেবিলের উপরেহঠাৎ রিংগিং এর শব্দ শুনে রাসেল মুঠোফোনটিকে হাতে নিয়ে ফোন নাম্বারটি দেখে ফয়সালকে বললঃ
রাঃ একটা টেলিফোন নাম্বার
ফঃ সম্ভবত এফ.এম. থেকেদে তারাতারি
রাঃ এতক্ষণ পর কল দিল?
       একথা বলতে বলতে মুঠোফোনটি ফয়সালের হাতে দিয়ে দিলফয়সাল কলটি রিসিভ করে এফ.এম. ৮৯.৬০ এর সাতমাথার মোড়অনুষ্ঠানটি অফ নেট’ (মাইক্রোফোন সংযোগ ব্যাতিত) অবস্থায় শুনতে পাচ্ছিলঃ
রনিঃ রাত আটটার নিউজ আপডেটের পর আবারও ফিরে আসলাম, সাতমাথার আড্ডায়আর এই মূহুর্তে আমাদের সঙ্গে আছে এক বন্ধু
       এই বলেই রনি ফয়সালের কলটি অন নেট’ (মাইক্রফোন সংযোগ সহ) অবস্থায় সংযোগ দিলেন এবং বললেনঃ
রনিঃ, তোমার নামটা একটু কও বারে
ফঃ ভাইয়া, আমার নাম ফয়সাল
রনিঃ ফয়সাল, তো হামাগরে তুমি কি শোনাবা?
ফঃ ভাইয়া, আমার স্বরচিত একটি সনেট শোনাব
রনিঃ হ্যাঁ শোনাও
ফঃ কবিতার নামঃ- অদৃষ্ট শুভক্ষন
তব ঐ চোঁখে আমি ধৃত হব যখন,
অপলকে আমার দিকে চেয়ে থাকবে;
আমাকেই নিয়ে ভাববে গভীরভাবে;
কাঠিন্যতা ভেঙ্গে যাবে, শান্ত হবে মন;
কিন্তু খুঁজবে নাকো এর কি বা কারণ
শুধু তুমি ক্রমে আমার কাছে আসবে;
করবে তুমি আমার প্রতি সমর্পণ

তবে আর রইবেনা মোর একাকিত্ত্ব;
থাকবে নাকো আর বিষাদ ভরা মন;
নব আলপনায় মেতে উঠবে চিত্ত;
চৌদিশে দেখা দিবে, অদৃষ্ট শুভক্ষণ
এতদিনে যে স্থানটা হয়ে ছিল শুন্য,
সেটা আর রইবেনা, হয়ে যাবে পূর্ণ
রনিঃ বাহ বা বা বা; আমি কি কব বারে, বুঝবার পারছিনাএত কঠিন ভাষায় কবিতা লিখছ!
ফঃ আসলে ভাইয়া, সনেটের ক্ষেত্রে, সুনির্দিষ্ট মিল-বিন্যাস আবার প্রত্যেক চরণে চৌদ্দটি করে অক্ষর মিলাতে হয়আর এ জন্যে ভাষাগত ও শাব্দিক দিক থেকে, প্রাঞ্জলতা ও সহজবোধ্যতা এতটা মেইনটেইন করা সম্বব হয় নাতারপরেও এটা তো অকেটায় বুঝা যায়
রনিঃ সনেটটা কিন্তু অনেক সুন্দর হইছেতো ছলপলেরা একটু হাত তালি লাগাও
       একথা বলা মাত্রই কম্পিউটার থেকে একটি ডিজিটাল তালি শুনিয়ে দিলেনএরপর রনি আবার বললেনঃ
রনিঃ ফয়সাল, তুমি কতগুলো কবিতা আর কতগুলো সনেট লিখছ বারে?
ফঃ কবিতা শতাধিক; সনেট ১১টি; গান ২৫টি; নাটক, গল্প এগুলো মিলে ১০টি আর উপন্যাস ২টি
রনিঃ আর তুমি যে কবিতাটা শুনালা তাতে যে প্রত্যাশা ফুঁটে উঠেছে, সেটা কার জন্য ভাইয়া?
ফঃ নাম না একজন প্রণয়ীনির জন্য
রনিঃ নামটা না জানা কেন?
ফঃ পাঁচদিন পূর্বে তিনটি মেয়ে একটি অটোরিক্সায় করে কলোনী থেকে সাতমাথা হয়ে নিউমার্কেটে যাচ্ছিলসেটাতে আমিও ছিলাম কিন্তু কিছু জানানোর পূর্বেই ভাগ্যক্রমে নেমে যেতে হলোপরে নিউ মার্কেটে অনেক খুঁজলাম কিন্তু পেলাম নাতো তাকে ভেবে এই পাঁচদিনে ৫টি গান, ১০টি কবিতা ও ১টি সনেট লিখেছিআর এত অল্প সময়ে এত বেশী, আগে কখনই লিখতে পারিনি
রনিঃ তো মেয়েটা যদি এফ.এম. এইট্টি নাইন পয়েন্ট সিক্সটিউন করে থাকে, তবে সহজেই তোমাকে আইডেন্টিফাই করতে পারবে, এমন কিছু কও
ফঃ ওহ হ্যাঁ; মেয়েটা ওর আম্মুর সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় বলছিল, ওর সঙ্গে যে দুইজন ছিল, তাদের নাম তানিয়া আর মৌমিতা
রনিঃ মেয়েটা যদি তোমাকে আইডেন্টিফাই করতে পারে, তাহলে তোমার সাথে কনট্র্যাক্ট করবে কেমনে?
ফঃ ভাইয়া, আমি অটোরিক্সানামে একটি ফেইসবুকের ফ্যান পেইজ খুলেছিও ইচ্ছা করলে সেটাতেই আমাকে ইনফর্ম করতে পারে
রনিঃ তাহলে ঠিক আছে ভাইয়া, তুমি তোমার প্রত্যাশীত ব্যাক্তিকে খুঁজে বাইর করোএই কামনা রইল এইট্টি নাইন পয়েন্ট সিক্সএবং আর.জে. রনির পক্ষ থেকেআর তুমি লেখালেখি চালিয়ে যাবা; আর মাঝে মাঝে হামাগরে একটু শুনাবা
ফঃ হ্যাঁ, ভাইয়া, কেন নয়?
রনিঃ তো ফয়সাল, তোমাকে অনেক ধন্যবাদ; আর অনেক ভালো থাকো ভাইয়া
ফঃ হ্যাঁ ভাইয়া, এফ.এম. এইট্টি নাইন পয়েন্ট সিক্সের সকল শ্রোতা এবং তৎসঙ্গে আপনাকেও অনেক ধণ্যবাদ
রনিঃ ওকে বাই
       জ্যোতিও সে সময়ে এফ.এম. ৮৯.৬০ টিউন (এ ক্ষেত্রে, এফ.এম./রেডিওর এর সেই স্টেষনে সচল থাকা ও শুনতে থাকা) করে ছিলফয়সালের বলা চতুর্দশপদী কবিতা (ইংরেজিতেঃ- সনেট) ও তার বলা কথা গুলো সবই শুনল এবং মনে পড়ে গেল সেদিন অটোরিক্সাতে ফোনে বলতে থাকা ফয়সালের কথাগুলোঃ
ফঃ আজকে একটি ফেইসবুকের পেইজ খুলব যেটার নাম হবে অটোরিক্সা
ফঃ কারণ, আজকে অটোরিক্সাতে এমন একটা কিছু দেখছি যেটা আসলে মনে রাখবার মত
       জ্যোতি তখন বিশ্মিত হয়ে গেল এবং তৎক্ষনাৎ ল্যাপটপ বের করে ফেইসবুকে অটোরিক্সানামে সার্চ (খোঁজা) দিলে, ফ্যান পেইজটি ও তৎসঙ্গে ফয়সালের ব্যাক্তিগত ইউজার আই.ডি (ব্যবহারকারীর আই.ডি.) টাও পেয়ে গেলফয়সালের ইউজার আই.ডি. ফয়সালের নাম অনুসারেই ছিল কিন্তু জ্যোতির ইউজার আই.ডি. ছিল শুক তারানামেসেদিন তার ইউজার আই.ডি. পেয়েও কোনকিছু করল নাতিনদিন পর ফ্রেন্ড-রিকুয়েষ্ট (ফেইসবুকে বন্ধু হবার জন্য প্রস্তাব দেয়া) পাঠাল; যাতে ফয়সাল না বুঝতে পারে যে, ও তার আই.ডি. টা এফ.এম. এ শুনেছে

       এরপর প্রায় ২৫ দিন পর জ্যোতি একদিন দেখল যে, ফয়সাল ফেইসবুকের অনলাইনে (সচল থাকা)তখন সে ফয়সালের সাথে কিছুক্ষন টেক্সট্‌ চ্যাট (লিখে মতবিনীময়)করলঃ
জ্যোঃ Hi friend! Good Night.
ফঃ Yes frnd. Gd n8.
জ্যোঃ How are you?
ফঃ f9 & u?
জ্যোঃ I am also fine. Where are you from?
ফঃ Bogra; & u?
জ্যোঃ Bogra is my hometown.
ফঃ R u study or job?
জ্যোঃ Study. Inter 1st year. And you?
ফঃ 5th Semester Of Diploma In Computer Engineering.
জ্যোঃ Oh; Good & Good bye.
ফঃ Ok. Bad Bye.
জ্যোঃ Bad Bye কেন?
ফঃ এরকম অনেক ফেইসবুকের Frnd এক/দুই বারের জন্য C8 করে হারিয়ে যায়তাই আমি Bad Bye লিখি
জ্যোঃ আমাকেও সেরকম মনে করলেন!
ফঃ তো কি? মনে করব না?
জ্যোঃ একদম নয়
ফঃ OK Sry. তাহলে Gd bye.
       এরপর জ্যোতি ফয়সালের লেখা সর্বশেষেনামে একটি কবিতা পড়লঃ
সর্বশেষে
.......ফয়সাল আহমেদ

আকাশের কাছে করেছি মিনতি, আমি রোজ রোজ;
তবুও সে বলেনি আমায়, দেয়নি তোমার খোঁজ
বাতাস বলেছে, তোমার চিঠি পৌছিয়ে দেবো তার কাছে;
কিন্তু পেলাম না তার সাড়া, হয়ত সেও বলেছে মিছে মিছে
চাঁদকে বলেছি, “দেখা পেলে তার বলবে আমায় ভাই”;
সেও আমায় বলছে বারাবার, “তারে দেখি নাই, তারে দেখি নাই
বৃষ্টিকে বলেছি, “তার স্পর্শ পেলে, আমায় আগে বলো
কিন্তু সেও বলছে না, শুধুই করছে ছলো ছলো
নদীকে বলেছি, “তোর শত শাখায়, সে পড়তেও পারে ধরা
সে বলে, “আমি পারব না এটা করতে ঐ সাগরের অনুমতি ছাড়া
সর্বশেষে কবিতা লিখে, জানিয়ে দিলাম ফেইসবুকেঃ  
কাছে এসে দাওনা ধরা, থেকো না আর লুকে

       কবিতাটি পড়ে তার নিচে কমেন্ট (মন্তব্য) লিখে দিল এবং ফয়সালও কমেন্টের মাধ্যমেই তার প্রত্যুত্তর লিখে দিলঃ
জ্যোঃ অনেক অনেক সুন্দর এবং অসাধারণ
ফঃ Tnx a lot.
জ্যোঃ এটা কার জন্য লিখেছেন?
ফঃ নাম না জানা একটি Girl এর জন্য
জ্যোঃ নামটা আজীবন না জানায় থেকে যাবে
ফঃ ফেইসবুকেই থাপ্পর মেরে দেব কিন্তু
জ্যোঃ দেন
ফঃ না থাক; বন্ধুদের ক্ষমা করতে হয়
জ্যোঃ Hmmmm......

       এই কমেন্ট শেষে জ্যোতি ফয়সালের প্রোফাইলটা ভালোভাবে দেখতেছিলতখন সে লক্ষ করল, ফয়সালের মুঠোফেনের নাম্বার দেয়া আছেজ্যোতি সেই নাম্বারে তার মুঠোফোন থেকে কল দিলফয়সাল কলটি রিসিভ করে বললঃ
ফঃ হ্যালো...
জ্যোঃ কেমন আছেন?
ফঃ আপনি কে বলছেন?
জ্যোঃ আমাকে চিনতে পারলেন না?
ফঃ না তো
জ্যোঃ গেজ করেন; আমি কে হতে পারি
ফঃ নট পসিবল ফর মি
জ্যোঃ আপনি আপনার ফ্রেন্ডকেই চিনলেন না!
ফঃ ফ্রেন্ড! কিভাবে? কে আপনি?
জ্যোঃ শুক তারা
ফঃ ওওও...; আপনি সেই ফেইসবুকের শুকতারা!
জ্যোঃ জ্বি না; আমি রাতের আকাশের শুক তারা কিন্তু মাঝে মাঝে ফেইসবুকে নেমে আসি
ফঃ বাহ! চমৎকার কথা বলতে পারেন আপনি
জ্যোঃ আপনি এর চেয়ে অনেক গুন বেশী
ফঃ কিভাবে বুঝলেন?
জ্যোঃ আপনার অটোরিক্সাপেইজের স্টাটাস, কবিতা, গান, এসব পড়লামঅনেক সুন্দর লেখেন আপনি
       ফাহিম একথা শুনে ছোট বাচ্চার মত ও হাস্যকর একটা সুরে বললঃ
ফঃ থ্যাঙ্ক ইউ
জ্যোঃ এভাবে বললেন কেন?
ফঃ ওহ; আমি মাঝে মাঝে এফ.এম. এ কবিতা শুনাইতখন আর.জে. অনেক সময় এরকম একটা থ্যাঙ্ক ইউ শোনায়তাই আমিও একটু ট্রায় করলাম
জ্যোঃ ওহ; আচ্ছাআপনি তো এক্টিমও করতে পারবেন দেখছি
ফঃ এক্টিম করতে আমার তেমনটা ইন্টারেস্ট নেইকিন্তু আমার লেখা স্ক্রিপ্ট দিয়ে কেউ এক্টিম করবে; সেইটা আমার শখ
জ্যোঃ মনোবলকে অটুট রাখুন; হয়ে যাবে এক সময়
ফঃ প্রে ফর মি
জ্যোঃ আচ্ছা, আমি আপনার ক্লোজ ফ্রেন্ড হতে পারিনা?
ফঃ মনোবলকে অটুট রাখুন; হয়ে যাবে এক সময়
       একথা শুনে মেয়েটি হেসে বললঃ
জ্যোঃ ফান করতেছেন?
ফঃ আপনি নিকটস্থ বন্ধু হতে চাইছেন তো ভাল কথামেনে নেব কিন্তু ফ্রেন্ডশীপের বিহ্যাবটা পজেটিব রাখতে হবে
জ্যোঃ মানে কি বুঝাতে চাচ্ছেন? এক্সপ্লেইন প্লিজ
ফঃ ফ্রেন্ডশীপ ইজ নট এ গেইম টু প্লেইট ইজ নট এ জাষ্ট ওয়ার্ড টু সেইট ডাজ নট স্টার্ট অন জানুয়ারী অ্যান্ড ইনড্‌স্‌ অন ফেব্রুয়ারীইট ইজ ফর টুডে, টু-মরো এন্ড এভরিডে
জ্যোঃ সবে মাত্র ফ্রেন্ড হতে চাইলাম, তাতেই যত কথা শুনাচ্ছেন; লাইফ-পার্টনার হতে চাইলে তো আরো কত কি জানি বলবেন
ফঃ সেটার আর চান্স নেই
জ্যোঃ কেন?
ফঃ হৃদয়ের স্থানটা অলরেডি একজনের জন্য সপে দিয়েছি
জ্যোঃ ওহ; অটোরিক্সার সেই মেয়েটা
ফঃ হ্যাঁ; সেটা তো পেইজেই দেখেছেন
জ্যোঃ অজানা, অচেনা একজনের আশায় বসে থাকলে, আপনার বয়েই যাবে
ফঃ না না, এমনভাবে বলছেন কেন? মেয়েটা আমার অজানা, সেটা ঠিক আছে কিন্তু অচেনা তো নয় সে আমাকে ভালবাসবে কিনা জানিনা কিন্তু তাকে তো খুঁজতে হবে; বিষয়টা জানাতে হবেতার জন্য এফ.এম. এ কথা বলছি; ফেইসবুকের পেইজে লেখা পোষ্ট করছি; আবার দুজনেই একই শহরে বাস করছিসৃষ্টিকর্তা চাইলে কোন একদিন হতেও পারে
জ্যোঃ ঐ মেয়েকে পাবার জন্য এত কনফিডেন্স! কতটায় ভালবেসে ফেলেছেন, মেয়েটাকে?
ফঃ ভালবাসার মাত্রাটা আত্মবিশ্বাসের সমানুপাতিক
জ্যোঃ ভেরি নাইচ
ফঃ ওয়াট ইজ ভেরি নাইচ?
জ্যোঃ অনেক সুন্দর বুঝাতে...
       বাক্যটির সমাপ্তির পূর্বেই ব্যালেন্সের (ভারসাম্য) সমাপ্তি ঘটলতাই মুঠোফোনটি রেখে আবার ফেইসবুকিং করতে লাগল ফয়সাল

       এর প্রায় এক সপ্তাহ পর ফয়সাল জ্যোতির মুঠোফোনে কল দিলকলটি রিসিভ করলে ফয়সাল বললঃ
ফঃ শুক তারা; কেমন আছেন আপনি?
জ্যোঃ ভালো নেই রে ভাই
ফঃ ভালো নেই কেন?
জ্যোঃ আমার প্রিয় মানুষটি আমাকে দেখতে পাচ্ছেনাআড়াল করে নিয়ে আছে কালো মেঘ
ফঃ হঠাৎ একদিন উঠবে ঝড়, পড়বে শুধু বৃষ্টি আর বৃষ্টিএরপরেই মেঘেরা হারিয়ে যাবে, আর পড়ে যাবে আপনার প্রিয় মানুষটির দৃষ্টিকে সেই পারসন?
       ফয়সাল এর উত্তর পেল নাতাই আবার বললঃ
ফঃ কি ব্যাপার? নিশ্চুপ হয়ে গেলেন যে
জ্যোঃ উপস্থিত সময়েও ভালই ছন্দ মেলাতে পারেন
ফঃ মে বি আপনার রিয়েল নেমটা তো শুক তারা নয়
জ্যোঃ জ্যোতি
ফঃ ওহ আচ্ছা; শুক তারা আর জ্যোতি, এই দুটোর মধ্যে তো ভাল একটা মিল আছে
জ্যোঃ কি রকম?
ফঃ শুক তারা জ্যোতি ছড়ায়
জ্যোঃ ওয়াউ ওয়ান্ডারফুল! আমি আসলে এমনভাবে কখনও ভাবিনি
ফঃ আমি একজন সৃজনী চেতনার মানুষ তো, তাই এসব একটু না ভাবলে হয় না
জ্যোঃ ভালো তো
ফঃ ওহ আরেকটা কথা; আমার কবিতাগুলো আপনাকে কেমন লাগে?
জ্যোঃ অনেক ভালো লাগে
ফঃ তো আমার আরেকটি পেইজ আছেফেইসবুক স্লাশ এফ.এ.আই.এস.এ.এল.ডাবলু.আর.আই.টি.ই.আর অর্থাৎ ফেইসবুক স্লাশ ফয়সাল রাইটার, এই ঠিকানায় প্রবেশ করলেই পেয়ে যাবেন
জ্যোঃ পেইজের নাম কি?                                      
ফঃ নাম দিয়ে সার্চ করতে চাইলে ফয়সাল আহমেদ বাংলায় লিখে পেইজ এ সার্চ দিতে হবে
জ্যোঃ আচ্ছা ঠিক আছে; দেখব
ফঃ কাউকে চেনা যায় অথচ জানা যায় নাআবার কাউকে জানা যায় অথচ চেনা যায় নাএই তো মানব জীবন; তাই না?
জ্যোঃ আপনি আমাকে কিছু মিন করতে চাইছেন?
ফঃ আপনি ফেইসবুকে ফেইস ফটো দেন নি, তাই না?
জ্যোঃ আমি ইন্টারনেটে ফটো রাখিনাআর সৃষ্টিকর্তা চাই যেকোন একদিন ফেইস টু ফেইই দেখতে পাবেন
ফঃ আপনি যেমন ভাবে বলতেছেন, মনে হচ্ছে আপনার সাথে দেখা করাটা খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার
জ্যোঃ কষ্টসাধ্য না হলেও সাধারণ কোন ব্যাপার নয়
ফঃ কেন?
জ্যোঃ আমি কোন ছেলের সাথে মিট করিনা, তাই
ফঃ নো প্রব্লেম; মানুষের কত রকমের না ফ্রেন্ড থাকেধরে নিলাম, আপনি একজন মোবাইল ফ্রেন্ড
জ্যোঃ আমার আব্বু ফোন করছে
ফঃ ওকে, তাহলে কেটে দিলাম
জ্যোঃ বাই
       এই বলে ফয়সাল লাইনটি কেটে দিল এরপর জ্যোতি ফয়সাল আহমেদনামের পেইজে ভিজিট করে তার বেশ কয়েকটি কবিতা পড়লতার মধ্যে একটি কবিতা অনেক বেশী ভালো লাগছিলসেটা হলোঃ
   শুধুই কল্পনায়
           .....ফয়সাল আহমেদ

কোন এক অজানা-অচেনা ঠিকানায়,
কোন এক নাম না জানা নদীর কিনারায়,
কোন এক শান্ত রজনীর মধ্যমায়,
কোন এক পূর্ণিমার রূপালী জ্যোৎস্নায়,
কাটাচ্ছি প্রহর, তুমি-আমি শুধু দুজনায়
কখনও গল্প করছি;
কখনও গান গাচ্ছি;
কখনও আবার চেয়ে আছি, পরস্পরের দিকে চুপটি করে
কখনও ছোটদের মত খেলতেছি;
কখনও মনের আনন্দে নাচতেছি;
কখনও আবার বসে আছি, দুজন দুজনার হাত ধরে
কখনও হাঁটছি আর হাঁটছি;
কখনও ছুটছি আর ছুটছি;
কখনও আবার নদীতে ভাসতেছি নৌকা-ভেলায় চড়ে
কখনও পানি ছিটাছিটি করছি;
কখনও একটু পিটাপিটি করছি;
কখনও আবার নিবিড় আলিঙ্গন, হঠাৎ যখন উঠছি ডরে
কিন্তু তুমি তো এখনও আসলেনা, এই জীবনের আঙ্গিনায়
তাই এসব বাস্তব নয়, দেখেছি শুধুই কল্পনায়

       এরপর থেকে তারা বন্ধু হিসেবে মাঝে মাঝে কথা বলেক্রমে ক্রমে দুজনের মধ্যে ভালো রকমের সমজতার সৃষ্টি হলএক সময় তারা পরস্পরকে তুইকরে ডাকা শুরু করলকিন্তু জ্যোতি তখনও স্বীকার করেনি যে, ফয়সালের সেই হারানো মেয়েটি সে নিজেইদীর্ঘদিন কথা বলে বুঝতে পারল যে, ফয়সাল সকল মেয়ের প্রতি দূর্বল নয়; শুধু সেই মেয়েটি তথা ওর প্রতি দূর্বলফয়সাল যে তাকে সত্যিই অনেক ভালবাসে, সেটা বুঝার আর কমতি রইল না তারতাই জ্যোতিও তাকে মন থেকে অনেক ভালবেসে ফেললকিন্তু ভাবল, তাকে ধরা দেবার বিষয়টা যদি একটু অসাধারণ এবং আকষর্ণীয় হয়, তবে ফয়সালকে বুঝাতে পারবে যে, কাহিনী শুধু ও একাই তেরী করতে পারেনা; সেও একটু পারেতাই এরপরের গল্পটা জ্যোতির উপর নির্ভর করছে

       ওদের প্রথম সাক্ষাতের বেশ কিছু দিন পূর্বে জ্যোতি ফয়সালের মুঠোফোনে কল দিয়ে ফয়সালের সাথে কথা বললঃ
জ্যোঃ কি রে কি করছিলি?
ফঃ একটা গান লিখতেছি
জ্যোঃ ওই মেয়েটাকে নিয়ে?
ফঃ ইয়েস
জ্যোঃ গানটা শুনব
ফঃ একটা অন্তরা এখনও বাকী আছে
জ্যোঃ যতটুকু লিখেছিস ততটুকুই শুনব
ফঃ আমি তো গান লিখি কিন্তু তেমন ভালো করে তো আর শুনাতে পারিনা রে
জ্যোঃ আমি কি বলছি, যে তোকে প্রফেসনাল সিঙ্গারের মত করে গাইতে হবে? তুই যেমন পারিস, তেমন করেই গেয়ে শোনা
ফঃ আচ্ছা তাহলে শোন্‌
এই বলে ফয়সাল জ্যোতিকে গান শোনাতে আরম্ভ করল
ফঃ কোথায় তুই হারিয়ে গেলি, একটি বার দেখা দিয়ে?
আমি অগনিত স্বপ্ন সাঁজিয়েছি, শুধু যে তোকে নিয়ে
জ্যোঃ হঠাৎ একদিন চমকে দিয়ে, আমিও আসব ধেয়ে
আর কাওকে তো নয়, শুধু তোকেই করব বিয়ে
ফঃ তোকে শুধু ভাবলেও যেন, পাই স্বর্গসুখ
তোকে কাছে পাবার আশায় বেঁধে আছে এই বুক
দিসনা না রে তুই দিসনা ব্যাথা;
শুনু নে না আমার কথা;
ভালবাসি তোকে অনেক বেশী, আমার নিজের চেয়ে
কোথায় তুই হারিয়ে গেলি, একটি বার দেখা দিয়ে?
আমি অগনিত স্বপ্ন সাঁজিয়েছি, শুধু যে তোকে নিয়ে
জ্যোঃ হঠাৎ একদিন চমকে দিয়ে, আমিও আসব ধেয়ে
আর কাওকে তো নয়, শুধু তোকেই করব বিয়ে
ফঃ কি ব্যাপার? আমার গানের মধ্যে আবার তোর এই কথাগুলো কই পেলি?
জ্যোঃ আমি একটু এড করে দিলামতাতে একটু গানটা বড় হল না?
ফঃ ভালোআর তোর কন্ঠ তো ভালোইগান-টান করিস নাকি?
জ্যোঃ আগে করতাম না; কিন্তু এখন দেখতেছি করতে হবে
ফঃ কেন?
জ্যোঃ তুই লিরিক রাইটার হলে আমাকে সিঙ্গার হতে হবে না?
ফঃ তুই অলটাইম ফাইজলামো করিস ক্যান?
জ্যোঃ তো ফ্রেন্ডরা ফাইজলামো করবে নাতো কি করবে? মায়া কান্না?
       এ সময় রাসেল এসে ফয়সালকে বললঃ
রাঃ ফয়সাল, মিলটা এখনই খেয়ে নেঠান্ডা হলে আর ভালো লাগবেনা
ফঃ আচ্ছা নিচ্ছি
জ্যোঃ ঠিক আছে ফ্রেন্ড; খেয়ে নেরেখে দিলাম
       এই বলে জ্যোতি লাইনটি কেটে দিল আর ফয়সাল রাতের খাবারটি খেয়ে নিল

জ্যোতিকে প্রথম দর্শণের এক বৎসর পূর্ন হওয়ার দুইদিন পূর্বে ফয়সাল জ্যোতির মুঠোফোনে কল দিয়ে তার সাথে অনেকক্ষণ কথা বললঃ
ফঃ কেমন আছিস?
জ্যোঃ আল্‌হাম্‌দুলিল্লাহ; ভালোতুই কেমন আছিস?
ফঃ যার ছবি এঁকেছে দুনয়ন, যার জন্য কাঁদে এ মন, তাকেই ভাবি সবচেয়ে আপনকিন্তু সে তো দিচ্ছেনা ধরা; তাই হয় থাকি শুধুই মনমরা
জ্যোঃ সেটার কি খবর?
ফঃ কোন্‌ খবরটা যেন?
জ্যোঃ ঐ যে, যার ছবি আঁকিয়ে নিয়েছিলি
ফঃ আঁকিয়ে নিয়েছিলাম না; আঁকিয়ে নিয়েছিকারণঃ তা তো এখনও মুছে যায় নি
জ্যোঃ আচ্ছা হলোই
ফঃ পরশুদিন আসলে সেই মেয়েটিকে দেখার এক বৎসর পূর্ণ হবেএখনও কোন সন্ধান মেলেনি
জ্যোঃ তাহলে সেদিন সেই প্লেসে আবার যাবিতার সাথে আবার দেখা হবে
ফঃ মনে হচ্ছে সেটা তুইতাই দেখা হবে বললেই দেখা হবে
জ্যোঃ না না; আমি বলছি, মেয়েটা যদি তোর মনের কথা যেনে থাকে, তাহলে তোর মত একজনকে না ভালবেসে পারবে না; আর যদি ভালবেসে থাকে, তাহলে এমন একটা দিনে না এসে পারবে না
ফঃ কেন? আমি কি এমন, যার জন্য আমাকে না ভালবেসে পারবে না?
জ্যোঃ ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তেছিস; প্রতিভাবান একজন ব্যাক্তি; আগামীর কবি, নাট্যকার, গীতিকারতাই আমার কাছে মনে হলো, অনেকেই তোকে....
ফঃ না না; অনেককে তো লাগবে নাঅনলি সেই মেয়েটা যেন, আমাকে ভালভাবে ভালবাসেদ্যাটস্‌ অ্যানাফআর আমার জন্য বেশি বেশি প্রার্থনা করবি
জ্যোঃ আমি প্রার্থনা করব, সেই মেয়েটিকে যেন আর কোনদিন দেখা না পাস
ফঃ কেন কেন?
জ্যোঃ তাহলে তুই আমার হয়ে যাবি তাই
ফঃ শুধু আমিই তোর হবো? তুই আমার হবিনা?
জ্যোঃ আমি তো তোর হয়েই আছি
ফঃ দেখা না করে তুই মোবাইল ফ্রেন্ড তো ভালোই ভালোই হইছিস কিন্তু মোবাইল ওয়াইফ্‌ তো আর হতে পারবিনা
জ্যোঃ সেটাও পারব
ফঃ তাই নাকি? তো হয়ে দেখা
জ্যোঃ আগে সময়টা আসুক; তাহলে দেখাব
ফঃ সময় কেমন করে আসে?
জ্যোঃ টিক টিক করে ঘড়ি চললেই সময় আসে
ফঃ তাহলে আমি ঘড়ির ব্যাটারী খুলে নিয়ে বন্ধ করে রাখব
জ্যোঃ গাড়ীর চাকা ঘুরলেই সময় আসবে
ফঃ গাড়ীর ইঞ্জিন নষ্ট করে দেবতাহলে তো আর সময় আসবে না
জ্যোঃ আসবেটাইম অ্যান্ড টাইড ওয়েট ফর নোন
ফঃ আর বকবক করিসনা; আমার কথাটা শোনবেশী ব্যালেন্স নাই; রাখলাম এখন ফোন
       এই বলে ফয়সাল লাইনটি কেটে দিল

       এর দুইদিন পরে ফয়সাল জামা-কাপড় পড়ে প্রস্তুত হচ্ছিল, জ্যোতিকে প্রথম যে স্থানে দেখেছিল, সেখানে যাবার জন্যেএ সময় তার মুঠোফোনে তার খালামনি কল করলফয়সাল কলটি রিসিভ করে তার খালামনির সাথে কথা বললঃ
ফঃ হ্যালো, খালামনি কেমন আছেন?
ফঃ হ্যাঁ, আমিও ভালো
ফঃ আজকেই!
ফঃ আচ্ছা ঠিক আছে; রওনা দিচ্ছি
এই বলে ফয়সাল লাইনটি কেটে বাসা থেকে বের হলো

       এরপর ফয়সাল বগুড়ার চারমাথায় বাসটার্মিনালে গিয়ে, বসে ছিলতখনও বাস ত্যাগ করেনিএমন সময় জ্যোতি তার মুঠোফোনে কল দিলফয়সাল রিসিভ করলে তাকে বললঃ
জ্যোঃ কি খবর তোর? আজকে না কোথায় জানি যাবার কথা
ফঃ হ্যাঁ; কিন্তু সেখানে তো যেতে পারছিনা
জ্যোঃ ক্যান?
ফঃ আমার খালাত বোনের হঠাৎ করে বিয়ে
জ্যোঃ এখন তো কেবল একটা বাসে; তাহলে বিকেলে যাবি
ফঃ এখন থেকে চার ঘন্টা পর বিয়ে; আর বাসায় পৌছিতে দুই ঘন্টার মত টাইম লাগবে
জ্যোঃ তোর খালার বাসাটা কোথায়?
ফঃ বিরামপুরআর তাছাড়া আমার গল্পটা তো আর আলাদিনের প্রদীপের মত নয় যে, বৎসর পূর্তি উপলক্ষে সেখানে গেলেই ঐ মেয়েটাকে দেখতে পাব
জ্যোঃ হ্যাঁ; ঠিকই বলেছিসতো তোর খালাত বোনকে ভালোভাবে বিদায় দিয়ে চলে আয়আল্লাহ হাফেজ
ফঃ আল্লাহ হাফেজ
       এই বলে লাইনটি কেটে দিল

       এরপর জ্যোতি তার খালাত ভাইয়ের মটরসাইকেলে চড়ে বগুড়া বাসটার্মিনালে গেলসেখানে জ্যোতির খালাত ভাই, দিনাজপুর কাউন্টার মাষ্টারকে জিঙ্গেস করলঃ
জো:খা:ভাঃ আচ্ছা, একটু আগে বিরাপুরের দিকে কোন বাস গেল?
কা: মাঃ প্রায় বিশ মিনিট আগেই গেল
জো:খা:ভাঃ বাসের নাম কি?
কা: মাঃ দ্রুতযান
       একথা শুনে তারা বিরাপুরের রাস্তার দিকে যাত্রা শুরু করলদ্রুতযান নামের বাসটিকে এড়িয়ে গোবিন্দগঞ্জ বাস স্টেশনে জ্যোতিকে নামিয়ে দিয়ে তার খালাত ভাই বগুড়ায় চলে আসলএর কিছু সময় অবধিতে, দ্রুযান নামের বাসটি স্ট্যান্ডে থেমে গেলসেই গাড়ীতে প্রবেশ করল জ্যোতিতাকে দেখতে পেয়ে হয়ে ফয়সালতার চোঁখ বোলাতে থাকল; তাকে কি সত্যিই দেখতেছে নাকি দৃষ্টিভ্রম? তার হৃদপিন্ডটা প্রবল বেগে স্পন্দিত হতে থাকল আর জ্যোতি বসে পড়ল বাসের সামনের সীটেকিছুক্ষনের মধ্যে গাড়ীটি স্টেশন থেকে ত্যাগ করল আর ফয়সাল মাঝের দিকের সিট থেকে উঠে এসে একেবারে পেছনের সীটে বসে জ্যোতির মুঠোফোনে কল দিলজ্যোতি তখন কানে ইয়ারফোন লেগে তার সাথে কথা বললঃ
জ্যোঃ হ্যালো
ফঃ সেই মেয়েটির দেখা পেয়ে গেছি
জ্যোঃ তোর না বাসায় যাবার কথা
ফঃ হ্যাঁ, বাসায় যাচ্ছি কিন্তু গোবিন্দগঞ্জ বাস স্ট্যান্ড থেকে মেয়েটা আমার বাসেই উঠে পড়ল
জ্যোঃ তাই নাকি! এ তো দেখছি আলাদিনের প্রদীপের মতই অবাক হবার কথা
ফঃ আই অ্যাম সো ডাজলিং
জ্যোঃ উনি এখন কোথায়?
ফঃ সামনের সীটে আর আমি একদম পিছনে
জ্যোঃ ইশ! আমার প্রার্থনাটা বোধ হয় কবুল হইল না
ফঃ দেৎ, এখন ফাইজলামো বাদ দেতোএখন কি করব? ঝটপট উপায় বের দে
জ্যোঃ তুই তো ইমেজিং করে নাটক, গল্প, উপন্যাস কতকিছু লেখিসআর আমি কি ছেড়াফাটা আইডিয়া দেব?
ফঃ ছেড়াফাটা হলেও দে ভাই; তবুও একটু সাহস চাই
জ্যোঃ আচ্ছা, ঐ মেয়ের পার্শ্বের সীটটা কি শূন্য? নাকি পূর্ণ?
ফঃ জিরো
জ্যোঃ তাহলে সেখানে গিয়ে...
ফঃ বসবে একটা হিরো
জ্যোঃ এরপর মনের কথা বলবি যেসব হয়ে ছিল জড়ো
ফঃ তুই ও কবি হয়ে গেলি নাকি?
জ্যোঃ হু; কবির কাছে আসলে সবাই কবি হয়ে যায়
ফঃ তাহলে এখন রাখ্‌; দেখি কি করা যায়
       এই বলে ফয়সাল তার মুঠোফোনটি পকেটে রেখে দিলএরপর ফয়সাল বাসের ভেতরের চারপাশটা তাকিয়ে দেখল, এখনও তিনটা সীট ফাঁকাতাই মনে মনে বললঃ
ফঃ এই সীট তিনটা পূর্ণ হলেই তো সেখানে বসার একটা চান্স হতে পারে।

       গাড়ী চলছে সামনের বাস স্ট্যান্ড থেকে তিনজন যাত্রী উঠল এবং ফাঁকা সীট তিনটিতে বসে পড়লতখন শুধু জ্যোতির পার্শ্বের সীটটিই ফাঁকাএবার ফয়সাল ধীরে ধীরে সামনের দিকে এগুতে থাকলজ্যোতির সীটের কাছে যাবার পূর্বে একটু পিছনের দিকে তাকাতেই হতচম্বিত হয়ে গেল; কারণঃ সে যেই সীট থেকে উঠে এসেছে, সেটাই তো ফাঁকা হয়ে গেছেনিরবে হাসল ফয়সালআবার তার সীটে এসে বসে পড়লতারপর বীপরিত পার্শ্বে লক্ষ্য করল যে, একটা সাত-আঁট বৎসরের মেয়েকে তার মা কোলে নিয়ে আছেতখন ফয়সাল তার পার্শ্বের লোকটিকে বললঃ
ফঃ আঙ্কেল, আপনি আমার সীটে বসলে, এই ছোট আপুটা আপনার সীটে বসতে পারে
       উনি তাতে রাজী হলেন এবং তাই করলেনএরপর ফয়সাল জ্যোতির কাছাকাছি গিয়ে বললঃ
ফঃ হ্যালো আপু
       জ্যোতি ফয়সালের দিকে তাকালতখন ফয়সাল বললঃ
ফঃ এখানে বসতে পারি? আর কোন সীট ফাঁকা নেই তো
       জ্যোতি কিছু না বলে তার দিক থেকে মুখ ফেরালআর মেয়েটির ভাবধারা দেখে ফয়সাল বললঃ
ফঃ আচ্ছা থাক; লাগবেনা
জ্যোঃ বসুন
       ফাহিম একটু বিচলিত হলো এবং ধীরগতিতে বসে পড়লতার কিছুক্ষণ পর জ্যোতি বললঃ
জ্যোঃ কোথায় যাবেন?
ফঃ বিরামপুরআপনি?
জ্যোঃ দিনাজপুর
ফঃ আচ্ছা; এর আগে আপনাকে কোথাও দেখছিলাম বলে মনে হচ্ছে
জ্যোঃ কই? আমার তো মনে হচ্ছে না
       কিছুক্ষণ তার চুপচাপগাড়ী চলছেএ সময় জ্যোতির ফোনে তার খালাত ভাই কল করলজ্যোতি তার সাথে এমনভাবে কথা বলল, যাতে ফয়সাল মনে করে ওর প্রেমিক পুরুষ আছেআর তাই কলটি রিসিভ করা মাত্রই শ্রুতিমধুর করে বললঃ
জ্যোঃ হ্যাঁ জান বলো
       ফয়সাল সেকথা শুনে তার কাছে মনে হল, তার মাথায় আকাশ থেকে পড়লজ্যোতির বীপরিত দিকে মুখ করে অবাকভাবে ও নিঃশব্দে সেও উচ্চারণ করলঃ
ফঃ জান!!!
জো:খা:ভাঃ কোথায় এখন?
জ্যোঃ এই তো এখন গোবিন্দগঞ্জ অতিক্রম করলাম
জো:খা:ভাঃ ভালভাবে দেখে শুনে থাকিস
জ্যোঃ তুমি তোমার চাকরী নিয়েই ব্যস্ত থাকো; তাই বলে তোমাকে আমি দেখতে পারব না?
জো:খা:ভাঃ কি রে এসব কি বলতেছিস?
জ্যোঃ তোমাকে তো কষ্ট করতে হবেনাআমি তোমার অফিসের সামনে গিয়েই ফোন দেব
জো:খা:ভাঃ আমাকে চিনিস নি? আর এসব কাকে কি বলতেছিস?
জ্যোঃ বিয়ে আজ না কালকে হবে; তাতে প্রব্লেম কি?
জো:খা:ভাঃ ওহ! কাউকে শুনাচ্ছিস মনে হয়
জ্যোঃ হ্যাঁ, আম্মু পারমিট করে দিয়েছে
জো:খা:ভাঃ বলতে থাক; আমি শুনতে থাকি
জ্যোঃ আচ্ছা ঠিক আছে; রাখলাম
       এসব বলে জ্যোতি ফয়সালের দিকে তাকিয়ে দেখে, তার চোঁখ দিয়ে অশ্রু বের হচ্ছেতাই তাকে বললঃ
জ্যোঃ কি ব্যাপার? আপনি মনে হয় কাঁদছেন?
ফঃ না আসলে, মানে, আমার চোঁখের একটু সমস্যামাঝে মাঝে এমনিতেই চোঁখ দিয়ে পানি বের হয়
জ্যোঃ চিকিৎসা করছেন না?
ফঃ প্রব্লেমটা আগে ছিলনা ; ইদানিন্তন দেখা দিচ্ছেএখন চিকিৎসা তো করতেই হবে
জ্যোঃ আসলে চোঁখের প্রব্লেম, তারাতারিই সল্‌ভ্‌ করা ভালো
ফঃ দেখি কবে ডাক্তারের কাছে যাওয়া য়ায়
       এরপর জ্যোতি আবার কানের মধ্যে ইয়ারফোন লাগালআবার দুজনেই নিরবগাড়ী চলছে কিন্তু প্রায় ২০ কিঃমিঃ দুরে গিয়ে গাড়ীর ইঞ্জিনের সমস্যা সৃষ্টি হলতাই বাসটি থেমে গেলএ সময় জ্যোতির কানে ইয়ারফোন লাগানো ছিল কিন্তু তা দিয়ে কোনকিছু শুনছিল নাসেটা কানে রাখার উদ্দেশ্য ছিল, ফয়সাল যাতে মনে করে ওর দিকে মেয়েটির কোন মনোযোগ ও আগ্রহ নেইএতে তার বিবর্ণ্য চোঁখ মুখ দেখে বুঝতে চেষ্টা করছিল, ফয়সালের মত একটা মানুষ কতটা কষ্ট অনুধাবন করতে পারেতাই জ্যোতি কিছু না জানার ভান করে, তার কান থেকে ইয়ারফোন খুলে তাকে বললঃ
জ্যোঃ কি হইলো?
ফঃ ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে গেছে
জ্যোঃ গাড়ীর ইঞ্জিন!
       এ সময় ফয়সালের প্রচন্ড কষ্ট অনুভুত হচ্ছিলআর তারই রুপরেখা হিসেবে একটু রাগান্বিত ভাবে, বিচলিত ভাবে, দ্রুগতিতে ও একটানা বলতে থাকলঃ
ফঃ না; আমার ভেতরের ইঞ্জিনএখানে গাড়ী বন্ধ হয়ে আছে; তো কিসের ইঞ্জিন নষ্ট হতে পারে, সেটা আপনি বোঝেন না?
       এ কথা শুনে জ্যোতি নিশ্চুপ আর ফয়সাল বাস থেকে নেমে গেল

       এর কিছুক্ষন পর জ্যোতি ফয়সালের মুঠোফোনে কল দিলকলটি রিসিভ করে ফয়সাল বললঃ
ফঃ জ্যোতি
জ্যোঃ হ্যাঁ, কি অবস্থা বল্‌
ফঃ এক সঙ্গে দুইটা ইঞ্জিন নষ্ট
জ্যোঃ একটা গাড়ীর আবার কয়টা ইঞ্জিন থাকে?
ফঃ একটা বাসের ইঞ্জিন, আরেকটা আমার ভেতরের
জ্যোঃ মানে কি?
ফঃ সি ইজ ইন এ রিলেশনশীপআমি, আমি কি করব এখন?
জ্যোঃ মানুষের জীবনটাই এমনসবকিছু সবার কপালে লেখা থাকে নাএতে ঐ মেয়েটার বা কি করার আছে? আর তার বয়ফ্রেন্ডেরই বা কি করার আছেওরাও তো একে অপরকে ভালবাসেতোর কাছে তাদের তো কোন দোষ নেই
ফঃ আমি তো তাদের দোষ দিচ্ছি নাআমি ভাবছি আমাকে নিয়েএত; এত কষ্ট লাগছে কেন? কাউকে না পাবার বেদনাটা এত কেন বেশী?
জ্যোঃ আরেকটা কথা; মেয়েরা প্রপজ একসেপ্ট না করতে চাইলে এমনিতেই বলে যে, ওর বয় ফ্রেন্ড আছে
ফঃ প্রপজ আর করলাম কই?
জ্যোঃ তাহলে?
ফঃ ফোনে ওর বয়ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলছিল
জ্যোঃ দেখ্‌ , তোর বুঝার মধ্যে ভুলও হতে পারে
ফঃ বুঝতে ভুল হয়নিমেয়েটাকে ভালবেসে ফেলায় বড় ভুলঅবশ্য নিজের জীবন থেকে একটা শিক্ষা নিলাম এবং অপরকেও শিক্ষা দেব, “উড়নপন্থিকে ভালবাসতে নেই
জ্যোঃ মন খারপ করিস না বন্ধুবাংলাদেশে সুন্দরী মেয়ের অভাব নেই
ফঃ আচ্ছা; ভালো লাগতেছেনাএখন রাখ্‌লাম
       এই বলে কলটি কেটে দিয়ে ফয়সাল তার মুঠোফোনটি পকেটে রেখে দিলতার কিছু সময় পর জ্যোতিও বাস থেকে নেমে ফয়সালের কাছাকাছি গিয়ে বললঃ
জ্যোঃ কি করতেছেন?
ফঃ ফেইসবুকিং
জ্যোঃ উপরে তাকান
       ফয়সাল উপরে আকাশের দিকে তাকিয়ে বললঃ
ফঃ কি?
জ্যোঃ আজকের আকাশটা একেবারেই পরিষ্কার, তাই না?
ফঃ হ্যাঁ, তো?
জ্যোঃ আকাশের গল্পটার সাথে, আমার নিজের লাইফের গল্পটার মিল রয়েছে
ফঃ কিভাবে?
জ্যোঃ পূর্বে আকাশটা যেমন মেঘের অন্তরালে ছিল, তেমনি আমিও আমার প্রিয় মানুষটির অন্তরালে ছিলামএখন আকাশটা যেমন পরিষ্কার, তেমনি ওর আর আমার মাঝের প্রতিবন্ধকতাগুলোও দুরীভুত হয়ে যাচ্ছে
       একথা শুনে ফয়সালের কাছে একটু রহস্যময় লাগল এবং ইতিপূর্বে জ্যোতির সাথে ফোনে বলা কিছু কথা স্বরণ করলঃ
ফঃ শুক তারা; কেমন আছেন আপনি?
জ্যোঃ ভালো নেই রে ভাই
ফঃ ভালো নেই কেন?
জ্যোঃ আমার প্রিয় মানুষটি আমাকে দেখতে পাচ্ছেনাআড়াল করে নিয়ে আছে কাল মেঘ
       একথা ভেবে ফয়সাল বললঃ
ফঃ সেই পারসনটা কে?
জ্যোঃ সেটা আমার পার্সোনাল ম্যাটার বাট্‌ আপনাকে বলব কেন?
ফঃ ওকে শুনলাম না
       এই বলে ফয়সাল সেখান থেকে বাসের অভ্যন্তরে প্রবেশ করলতারপর বাসের আরেক যাত্রীর থেকে ওনার মুঠোফোনটি নিয়ে জ্যোতির মুঠোফোনে কল দিলএ সময় ফয়সাল জানালার গ্লাস এর মধ্য দিয়ে দেখল যে, সেই মেয়েটি তার মুঠোফোনটি সাইট ব্যাগ থেকে বের করে কানে ধরে কথা বলছেফয়সাল তখন কিছু না বলে লাইনটি কেটে দিল এবং মুঠোফোনটি যাত্রীকে ফেরৎ দিয়ে, বাস থেনে নেমে এমন এক স্থানে গেল, যেখানে জ্যোতি তাকে দেখতে পাচ্ছিল নাসেখানে গিয়ে তার বন্ধু রাসেলের মুঠোফোনে কল দিয়ে তার সাথে কথা বললঃ
ফঃ হেই রাসেল
রাঃ হ্যাঁ বন্ধু বল্‌
ফঃ আমার লাভ স্টোরিটা যে নাটকের মতই সাজঁতে পারে, সেটা আমি কখনও ইমেজিং করিনি
রাঃ ব্যাপার কি বল্‌তো
ফঃ গত বৎসরের এই দিনে আমি সেই মেয়েটিকে দেখছিলামআর এই বৎসরের এইদিনে আবার দেখতে পাচ্ছি
রাঃ কাজটি কি কমপ্লিট নাকি?
ফঃ কমপ্লিট না কিন্তু মেয়েটা কে জানিস?
রাঃ কে?
ফঃ আমার মোবাইল ফ্রেন্ড জ্যোতি
রাঃ ওয়াউ! কিয়া বাত! আই এম রেইলি সারপ্রাইস্‌ড
       তাদের ফোনে কথা বলা বহাল ছিল আর এদিকে জ্যোতি কিছুক্ষণ পূর্বে কল আসা সেই নাম্বারে কল দিলকলটি রিসিভ করলে সেই গাড়ীর সেই যাত্রীর সাথে কথা বললঃ
জ্যোঃ হ্যালো, আস্‌সালামুওয়াআলাইকুম
বাস-যাত্রীঃ ওয়াআলাইকুম আস্‌সালামকে?
জ্যোঃ কিছুক্ষণ পূর্বে এই নাম্বার থেকে কল আসছিল কিন্তু কিছু শুনতে পেলাম না
বাস-যাত্রীঃ ওহ; এটা বাসের মধ্যে এক ভাই আমার ফোন থেকে কল দিছিলো
জ্যোঃ কই গাড়ীর শব্দ তো শুনতে পাচ্ছিনা
বাস-যাত্রীঃ গাড়ী নষ্ট হয়ে গেছে
জ্যোঃ আচ্ছা ঠিক আছেআর আমি যে কল দিয়েছিলাম, সেটা ওনাকে আর বলার দরকার নাই
       এই বলে লাইনটি কেটে দিলআর তখন যে ফয়সাল কল দিয়েছিল, সেটা ভালো করেই বুঝতে পারল

       এর কিছুক্ষণ পর ফয়সাল জ্যোতির কাছে এসে বললঃ
ফঃ গাড়ী ঠিক হতে মনে হয় আরো টাইম লাগবে; চলুন ঐ দিকটা থেকে হেঁটে আসি
জ্যোঃ হ্যাঁ, চলুনমনে হয়, একটা ফ্লোয়ার গার্ডেন দেখতে পাচ্ছি
ফঃ ফুল আপনার খুব পছন্দ?
জ্যোঃ হ্যাঁ, অনেকটায়
       এসব কথা বলতে বলতে তারা বাসের পিছনের দিকে হাঁটতে থাকল কিন্তু ফুলের বাগানে যাবার পূর্বেই বাসের সাইরেন এর শব্দ ভেসে আসলতখন ফয়সাল পিছনের দিকে একটু দৌড়াতে লাগল এবং জোড়ালো আওয়াজ করে বলতে থাকলঃ
ফঃ এই মামা......., এই বাস........, হেই দ্রুতযান.........
       কিন্তু কোন লাভ হলনাগাড়ীটি চলে গেলজ্যোতি তখন ফয়সালের কাছাকাছি এসে বললঃ
জ্যোঃ গাড়ীটি হাতছাড়া করে প্রব্লেমটা বোধ হয় আপনার বেশী হল, তাই না?
ফঃ হ্যাঁ, আমাকে আর দুই ঘন্টার মধ্যে বাসায় পৌছিতে হবেকিন্তু আপনি কিভাবে বুঝলেন?
জ্যোঃ না, সেটা নাআমি ভাবতেছি আপনার মনে হয়, গাড়ীতে ব্যাগ ছিল?
ফঃ না; আমার ব্যাগ ছিলনা
জ্যোঃ ওহ; তাহলে তো ভালোই
ফঃ গাড়ীর গল্পটার সাথে আমার নিজের জীবনের গল্পটার মিল রয়েছে
জ্যোঃ সেটা কিভাবে?
ফঃ গাড়ীর ইঞ্জিন যখন নষ্ট হয়ে গেল, তখন যেন আমার শরীরে ইঞ্জিনটাও নষ্ট হতে চলছিলএখন আবার গাড়ীর ইঞ্জিনটা ভালো হয়ে গেল, তেমনি শরীরের ইঞ্জিনটাও ভালো হয়ে গেল
জ্যোঃ তখন হয়ত, আপনার গার্লফ্রেন্ড এর ব্যাড নিউজ পেয়েছিলেন?
ফঃ সেটা আমার পার্সোনাল ম্যাটার বাট্‌ আপনাকে বলব কেন?
জ্যোঃ ওকে, শুনতে হবেনা কিন্তু এখন বলেন, বাকী পথ কিভাবে যাব?
ফঃ এখন.......; ইয়েস; গুড আইডিয়াসামনের স্ট্যান্ড প্রর্যন্ত অটোরিক্সাতেতারপর আবার বাসে
       এর কিছুক্ষণ পর তারা একটি অটোরিক্সাতে উঠে রাস্তা অতিক্রম করতেছিলতারা দুইজন একে অপরকে ঠিকই চিনতে পারল কিন্তু ফয়সাল চাচ্ছিল, বিষয়টা জ্যোতি বলুক; আর জ্যোতি চাচ্ছিল, ফয়সাল বলুকআর ফয়সাল যাতে সহজেই বলতে উৎসুক হয়, সেই জন্য জ্যোতি তাকে বললঃ
জ্যোঃ আচ্ছা, আপনি বাসে বললেন, আমাকে কোথাও দেখেছিলেনসেটা কোথায়?
ফঃ না, সেটা আপনি না; অন্য কেউ হতে পারে
       এর কিছুক্ষণ পর জ্যোতি আবার বললঃ
জ্যোঃ আচ্ছা তখন বললেন, বাসের সাথে আপনার জীবনের মিলসেই গল্পটা শুনাবেন?
ফঃ হ্যাঁ শুনাব কিন্তু এর পূর্বে আপনার আকাশ-মেঘের গল্পটা শোনাতে হবে
জ্যোঃ আগে আপনার গল্পটা শোনানতারপরেই আমার গল্পটা শোনাচ্ছি
ফঃ না, আগে আপনারটা
জ্যোঃ না, আগে আপনারটা শোনান না
ফঃ ওকেআপনার গল্প আমাকে শুনতে হবেনা; আমার গল্পটাও আপনাকে শুনতে হবেনাচুপচাপ বসে থাকেন
       এরপর তারা দুইজনেই নিরবঅটোরিক্সা চলছেহঠাৎ করে ফয়সাল এমন একটা অস্থিরভাবে তার পকেটগুলোতে হাত দিয়ে খুঁজতে খুঁজতে দ্রুতগতিতে বলতে থাকলঃ
ফঃ আমার ফোন? আমার মোবাইল কই? তারাতারি আমার ফোনে একটা কল দেন; তারাতারি
       একথা বলা শেষ হতে না হতেই জ্যোতি তার মুঠোফোন থেকে ফয়সালের ফোনে কল দিল এবং তৎক্ষনাৎ ফয়সালের মুঠোফোনটি বেজে উঠলতখন জ্যোতি বললঃ
জ্যোঃ কি ব্যাপার? আপনার নাকি ফোন লস্ট হয়ে গেছে?
ফঃ এর পূর্বে বলেন, আমার সেল ফোনের নাম্বারটা কই পেলেন?
জ্যোঃ ওহ সীট! তুই একটা.......
ফঃ আমি একটা.........
জ্যোঃ আসলে তুই একটা......
ফঃ আসলে আমি একটা.......
জ্যোঃ তুই একটা শয়তান
ফঃ তাহলে তুই শয়তানের বউ
জ্যোঃ জ্বি না; আমি একজন অটোরিক্সার প্যাসেঞ্জার
ফঃ তাহলে তো আমিও শয়তান নই
জ্যোঃ তো?
ফঃ একজন অটোরিক্সার প্যাসেঞ্জারের সম্ভাব্য হা, হা, হা, হাজব্যান্ড

***...***সমাপ্ত***...***

{প্রধান থিমঃ ২০/০২/২০১৩}
{সর্বশেষ সংশোধনঃ ২০/০২/২০১৪}

এভাবেই লিখতে লিখতে আমি (ফয়সাল) আমার কাল্পনিক মেয়ের সাথে কাল্পনিক প্রেমকাহিনীটির সমাপ্তি করে ফেললামআবার কোন একদিন, আমার লেখা নতুন কল্প-কাহীনির গল্প আপনার কাছে উপস্থিত করব ইন্‌শআল্লাহসেই প্রর্যন্ত অপেক্ষা করুনভালো থাকবেন আর গল্প/নাটকটি সর্বপরি আপনাকে কেমন লাগলো, সেটা জানাতে নিশ্চয় ভুলবেন না 
[বিঃদ্রঃনকল করলে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।]

1 comment:

  1. Hard Rock Hotel & Casino, NV | Dr.MD
    Experience Las Vegas' finest entertainment and hospitality, with 청주 출장마사지 Hard 창원 출장샵 Rock Hotel & Casino, 영주 출장샵 From slots to 창원 출장안마 table games, there's 보령 출장안마 something for everyone.

    ReplyDelete