আমি পারব না (চতুর্দশপদী কবিতা)


তুমি যদি বল, "নিজেকে সংযত রেখে,
ইসলাম ও ন্যায় পথে চলতে হবে।
জীবনকে উজ্জল করে গড়তে হবে।"
তা আমি দিব্যি পারব দাড়াব না রুখে।
কিন্তু যদি বল আমাতে বিক্ষণ রেখে,
"তোমাকে অসাধারণ সুন্দর হতে হবে।
সুঠাম দেহের অধিকারী হতে হবে।"
"তা আমি পারব না", ধ্বনিত হবে মুখে।

আমি অনেক কিছু জয় করতে পারি।
সৃজনী চেতনা ঠাসা আমার মাথায়।
কিন্তু নিজেকে কি বিকৃত করতে পারি?
যা পেয়েছি সেটাও স্রষ্টার করুনায়।
আমি নিজে যা তাতেই তৃপ্ত নয় ক্ষিপ্ত।
তার তরে করি শুকরিয়া ও প্রভুত্ব।

____বগুড়া ২৫/০১/২০১৬

কিছু একটা পাবেনা


তুমি যার লাগি হবে উদাসীন হবে মত্ত,
সে হয়ত অনেক বেশী সুন্দর ও শোভিত।
যতটা বেশী সুন্দর কিংবা শোভিত আমি না।
কিন্তু মনে রেখ, তাতে কিছু একটা পাবেনা।


তুমি যাকে সঙ্গী হিসেবে করবে নির্বাচিত,
সে হয়ত অনেক সুউচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত।
যতটা বেশী শিক্ষিত আমি হতে পারব না।
কিন্তু মনে রেখ, তাতে কিছু একটা পাবেনা।

তুমি যাকে বিবাহ বন্ধনে করবে বাধিত,
সে হয়ত অনেক অনেক বেশী সম্ভ্রান্ত।
যতটা বেশী সম্ভ্রান্ত আমি নই বা হবনা।
কিন্তু মনে রেখ, তাতে কিছু একটা পাবেনা।

আমার ইচ্ছেরা প্রতিবন্ধী (দশমপদী কবিতা ১০০ লাইন)


তোমার হাসিতে ফোটে ফুল;
গোলাপ, জবা কিংবা শিমুল।
তোমার হাসিতে গায় গান,
পাপিয়া, কোকিল সর্ব স্থান।
তোমার হাসিতে বৃষ্টি ঝরে,
সকাল-সন্ধ্যা, রাত-দুপুরে।
তোমার হাসিতে সূর্য ওঠে,
আধার-আর্দ্রতা নেয় টুটে।
তোমার হাসিতে পাখি উরে,
চোখের নিকটে কিংবা দুরে।

যদিও এগুলো সত্য নয়,
তবুও  এমন মনে হয়।
তোমার হাসিতে আমি মত্ত ;
এই কথাটি বড়ই সত্য।
তোমার হাসি কিনতে চাই ;
সর্বদা যেন দেখতে পাই।
তোমার হাসিতে আমি হাসি ;
তাই হাসি চাই দিবানিশি।
তোমার হাসিতে আমি জয়ী ;
প্রত্যেক বাঁধায়  দীপ্তিময়ী।

তোমার কান্নায় ভূমি কাঁপে ;
আমরা তখন লাফে ঝাঁপে।
তোমার কান্নায় মেঘ ডাকে ;
আতঙ্ক জন্মে সবার বুকে।
তোমার কান্নায় ভুত নাচে,
আমার বাড়ির খুব কাছে।
তোমার কান্নার তিব্র শব্দ,
দুরে থাকলেও কানে লব্ধ।
তোমার কান্নায় বন্যা বয়ে,
আমার সব দেয় ভাসিয়ে।
      
জানি এসব যৌক্তিক নয়,
তবুও  এমন মনে হয়।
তোমার কান্নায় আমি রাগি,
এই কথা মনে দিচ্ছি জাগি।
তোমার কান্না বেচাতে চাই,
আর যেন না দেখতে পাই।
তোমার কান্নায় আমি কাঁদি,
তাই সে কান্নার হচ্ছি বাদী।
তোমার কান্নাতে আমি নত,
আসবে বিফল শত শত।

রাত সমাপনে সুপ্রভাতে,
আসব আমি প্রদীপ্তি-হাতে।
গ্রীষ্ম কালে উত্তপ্ত সময়ে,
আসব শীতল  বায়ু হয়ে।
শীতের শেষে বসন্ত কালে,
আসব আমি প্রকৃতি পালে।
বিকেল শেষে গোধূলি হয়ে,
আসব আমি শত রং নিয়ে।
তোমার খুব কাছের ঝিলে,
আসব আমি পদ্মের দলে।

যদিও এসব  অসম্ভব,
তবুও  এমন চিন্তা সব।
তোমার নৈকট্যে আমি মত্ত ;
এই কথাটি বড়ই সত্য।
তোমার কাছে থাকতে চাই ;
কিন্তু কোনরূপ স্বার্থ নাই।
শুধু বিসর্জনে আমি দগ্ধ ;
অর্জন সব,  পিঞ্জরে বদ্ধ।
তোমার নৈকট্য শক্তি দিত,
আমি হতাম অনুপ্রাণিত।
        
তুমি চাইলে বাউল হব,
দোতারা বেজে গান শোনাব।
তুমি চাইলে শিক্ষক হব,
মন দিয়ে তোমায় শেখাব।
তুমি চাইলে চালক হব,
তোমায় নিয়ে গাড়ি চালাব।
তুমি চাইলে রাঁধুনি হব,
রান্না করে তোমায় ভোজাব।
তুমি চাইলে ফুল কুড়াব।
ফুল দিয়ে তোমায় সাজাব।

যদিও এত চাওনি তুমি,
তবুও বলে দিলাম আমি।
সাধন আমার তব হিতে,
সাধ্য বিপুল সকল রীতে।
তোমার তরে সবই রাজি ;
জীবনটাকে রাখব বাজি।
আমার চাওয়া শূন্যে উড়ে ;
তোমার চাওয়া পূর্ণে ভরে।
তোমার প্রাপ্তি আমার খুশী,
কারণ তোমায় ভালবাসি।

ইচ্ছে আমার তোমার সাথে,
হাঁটব নীরব  সুপ্রভাতে।
ইচ্ছে আমার তোমায় নিয়ে,
নদী হব পার নৌকা বয়ে।
ইচ্ছে আমার তোমার চোখে,
তাকিয়ে থাকব অপলকে।
ইচ্ছে আমার তোমার গালে,
আঁকাব ছবি  চৈতন্য কালে।
ইচ্ছে আমার তোমার সাথে,
গাইব গান চাঁদনি রাতে।
জানি এসব হবার নয় ;

তবুও এমন  ইচ্ছা হয়।
তোমার প্রণয়ে আমি মগ্ন,
এ বিষয়টি  বড়ই নগ্ন।
আমার ইচ্ছার ফল নাই,
যদি না তোমার ইচ্ছা পাই।
আমার ইচ্ছেরা প্রতিবন্ধী।
তোমার ইচ্ছার কাছে বন্দি।
তবু ইচ্ছেরা জীবিত আছে,
প্রেরণা হয়ে মাথায় নাচে।

বিঃ দ্রঃ কবিতাটিতে ১০টি স্তবক আছে। আবার প্রত্যেক স্তবকে ১০টি চরণ ও প্রত্যেক চরণে ১০টি করে মাত্রাযুক্ত।